বিবরণ
অপেক্ষা করেন তিনি। অন্বেষণ করেন একটি সুর, যা কারও দোতারায় গান হয়ে বেজেছিল একদিন। সেই সুরসম্রাটের কথা বলতে বলতে, তাঁর জীবন-কাহিনী গড়তে গড়তে কবি কখন যেন পেয়ে যান সেই সুর! তারপর সেই সুরকে আকাশের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে কবির প্রতীক্ষা। কিন্তু সুরের আকাশে কালো মেঘের মতো পুঞ্জীভূত হয় নিষ্ঠুর সমাজনিয়তি তাড়িত সহায়হীন মানুষের কান্না। জেহানাবাদের গণহত্যায়, রণবীর সেনার নৃশংসতায় ক্লেদাক্ত হয় মাটি। ক্লিন্ন মানুষ চেয়ে থাকে কবির দিকে অনিঃশেষ বিপন্নতা নিয়ে। অস্থিরতা ক্রমশ বেড়ে চলে যখন বিজ্ঞানমনস্কতা মূঢ়তায় পর্যবসিত হয়। পোখরানে ভয়ঙ্কর পারমাণবিক বিস্ফোরণে আর এক দুর্যোগপর্বের মুখোমুখি মানুষ। ভ্যান গখ বা জীবনানন্দের জীবননাট্যের নিয়তি সহসা ছায়া ফেলে যায়। কবি তবু অপেক্ষা করেন, আবহমান মানুষের হাতে তুলে দিতে চান সেই আকাশ, যেখানে সুর ভেসে বেড়ায়। এই কাব্যগ্রন্থের অপর সম্পদ এর চিত্রসৌন্দর্য। ছবিগুলির স্রষ্টা প্রখ্যাত শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। কবিতার প্রতি তাঁর নিবিড় টান বহুদিনের। সেই টানেই তিনি কবিতা ও চিত্রকলার সেতু গড়তে চেয়েছেন বারংবার। ইতিপূর্বে কয়েকটি দ্বিভাষিক কাব্যসংকলন চিত্রায়িত করেছেন তিনি। এবার শুভাপ্রসন্ন ছবি আঁকলেন জয় গোস্বামীর এই বিশেষ কাব্যগ্রন্থের জন্য। রচিত হল কবিতা ও চিত্রকলার আর-এক আশ্চর্য সেতু।