বিবরণ
সমকালের গদ্যসাহিত্যে জয় গোস্বামী-র উপন্যাস এক পরীক্ষামূলক সংযোজন। বিপন্ন এক মানুষ বারবার দ্বিধাজড়িত ভঙ্গিতে এসে দাঁড়ায় জয়-এর উপন্যাসে। রুদ্ধশ্বাস ভাষায় খেলা করে বিষন্ন যৌনতা, বোবা প্রেম, লুকোনো কান্না আর একাকিত্ব। এ যেন প্রচলিত জীবনের অপ্রচলিত পাঠ। কোথাও ঘুমিয়ে পড়া দিনগুলি ঘুম ভেঙে ভেসে ওঠে রুগ্ণ এক কবির লেখায়। কোথাও জীবনানন্দের সেইসব শেয়ালেরা প্রসঙ্গে অদ্ভুত মেয়ে রাঙা বলে, ওরা হয়তো কোথা থেকে মার খেয়ে এসেছে...তাড়া খেয়ে এসেছে। কেউ-বা অভিশপ্তের মতো গান বহন করে চলে মনে মনে, কিন্তু গাইতে পারে না। এক চিত্রকর বাবা আশ্চর্য চোখে দ্যাখেন, সন্ধে হলে মেয়ে সাঁঝবাতির গা থেকে আলো বেরোয়। নারীর গর্ভে সন্তান বুনে দেওয়ার হাহাকার নিয়ে কোথাও-বা ছুটে বেড়ায় এক প্রেতপুরুষ। জয় গোস্বামীর ‘দশটি উপন্যাস’-এ সংকলিত হয়েছে মনোরমের উপন্যাস, সেইসব শেয়ালেরা, সুড়ঙ্গ ও প্রতিরক্ষা, সব অন্ধকার ফুলগাছ, সাঁঝবাতির রূপকথারা, ব্রহ্মরাক্ষস, দাদাভাইদের পাড়া, হাসির কথাই তো হচ্ছিল, অনুপম কথা, প্রেতপুরুষ। সব ক’টি রচনায় মগ্নচৈতন্যের আলোয় কখন যেন মুছে গেছে গদ্য ও কবিতার মাঝখানের অভ্যস্ত দেওয়াল।