বিবরণ
কিছু তরুণ-তরুণীর জীবনের থেকে তুলে নেওয়া চোদ্দো মাস এই উপন্যাসের সময়কাল। শহর এর পটভূমি। হাইরাইজার, মাস্টিক অ্যাসফল্ট, শপিংমল আর জমজমাট ট্রাফিকের মাঝে পাক খাওয়া ফুলের হারানো গন্ধ, বন্ধুর হাত, বাঁশিওলার সুর আর অগণিত রোজকার মানুষ এর অন্বেষণ। উপন্যাসের কেন্দ্রে রয়েছে সফটওয়্যার ফার্মে চাকরি করা রীপ আর তিথি, অ্যাথলিট পুষ্পল, উচ্চাকাঙ্ক্ষী রাই, রয়েছে মনমরা পুলু, বিদেশ যেতে না পারা শাক্য, অভিমানী মৌনিকা বা মুখার্জি-বাড়িতে কাজ করা ছেলে বাটু। আলাদা আলাদা হলেও যেন কোথাও এরা এক। কোথাও যেন সবাই বদ্ধ, সবাই নিরুপায়। ক্রমশ বদলের হাওয়া লাগে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টাতে থাকে এদের জীবন। একজনের বেঁচে থাকা ক্রমশ জড়িয়ে যেতে থাকে অন্যের বেঁচে থাকার সঙ্গে। রীপের একাকিত্বে ঢুকে পড়তে চায় তিথি। পুষ্পলের দৌড় ট্র্যাক ছাড়িয়ে ঢুকে পড়ে জীবনে। সামান্য সময়ের জন্য হলেও এরোপ্লেন বাটুকে ভুলিয়ে দেয় ওর দারিদ্র্য। মৌনিকার মোবাইলে মধ্যরাতে বেজে ওঠে পুরনো কবিতা। বাবা-মায়ের সম্পর্কের মাঝে পুলু দেখতে পায় গভীর শূন্যতা। এই সমস্ত ভাঙচুর সহ্য করেও প্রত্যেকে নিজের ভেতরে টের পায় এক অজানা টান। টের পায় এক পাল্টা হাওয়া। যে যার মতো ঘুরে দাঁড়াতে চায়। কাহিনির পরতে পরতে এই তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে রোদ-বৃষ্টি আর ধুলো-মাটির মতো জড়িয়ে থাকে কল্লোলিনী কলকাতা।