বিবরণ
সহজ ভাষায় ‘জিওপোয়েটিক্স’ হলো ভৌগলিক সংস্থান দ্বারা প্রভাবিত এবং তদ্বেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি দ্বারা জারিত বোধের কবিতাকারি (পোয়েটিক্স)। ‘দিবে আর নিবে, মিলিবে মেলাবে’– এই সহনশীলতায় সংকরয়ানের মাধ্যমে বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতি ঋদ্ধ হয়েছে চিরকাল। গুরুত্বপূর্ণ প্রধান বাঙালী কবিদের মধ্যে যাঁরা দীর্ঘদিন বিদেশে থেকেছেন তাঁদের প্রায় সকলেই হয় বিদেশকালীন বাংলা কবিতা লিখতে পারেননি অথবা লিখেছেন তাঁদের চিরাচরিত ‘বাঙালী’ লেখা যার মধ্যে ভিন সংস্কৃতির সংকরায়ন বা সংস্থাপন-কলাপ অনুপস্থিত। উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রমের মধ্যে অমিয় চক্রবর্তী, লোকনাথ ভট্টাচার্য ও অরুণ মিত্রর মতো অত্যূজ্জ্বল কজন। এঁদের সাথে যোগ হলেন আর্যনীল মুখোপাধ্যায়। তাঁর তিন দশকের অধিক তুমুলভাবে স্বতন্ত্র পরীক্ষাকবিতার প্রায় সবটাই বিদেশে রচিত। সেই প্রকল্পধর্মী কবিতার প্রথম খণ্ডে রয়েছে এমন এক কবিতা যা আলোক সরকারের মতে ‘সমসময়ের বাংলা কবিতার প্রতিপক্ষ নয়’, বরং ‘এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন যার চিৎকার নেই, আত্মপ্রমাণের উদ্ভ্রান্তি নেই’। এই কবিতা বারীন ঘোষালের মতে ‘অনবরত জায়গা বদলানো, যেন অস্থির, বিশৃঙ্খল, উপপাদ্যহীন জ্যামিতির’ মতো যা বহুশিল্প, বহুভাষা ও বহুসংস্কৃতি অনুপ্রাণিত এক ‘অসম্ভব-কবিতা’ যা কমুনিকেশনকে বিতাড়িত না ক’রে বরং তাকে জাগ্রত রাখে। এক কমুনিকেশন তৈরি হয় যাতে পাঠকের লেখক হয়ে ওঠা সহজ হয়ে আসে।