বিবরণ
বহতা নদী যেমন নতুন বাঁক নেয়, দেখায় নতুন শোভা, সৃজনশীল লেখকও তেমনই তার রচনায় মোড় ঘুরিয়ে তুলে ধরেন অদেখা ঐশ্বর্য, নতুন সৌন্দর্য। জঙ্গলমহল থেকে প্রেম, প্রেম থেকে জীবনের সমগ্রতায় চোখ ফিরিয়েছেন বুদ্ধদেব গুহ। তাঁর ইদানীংকার রচনায় বড় হয়ে দেখা দিয়েছে সমাজমনস্কতা, সূক্ষ্ম হয়ে ধরা পড়েছে জীবন বোধ। সমাজের সামগ্রিক কাঠামোটি বিশ্লেষণ করতে চাইছেন তিনি, দেখাতে চাইছেন উঁচু-নিচু-মাঝারি সর্বস্তরের মানুষের ভেতরের চেহারাটা কোথায় মিল, কোথায় অমিল, কে কতটা শুদ্ধ, কতটা কৃত্রিম, কোথায় সরলতা, কোথায় ভান, কোথায় আপস, কোথায় অসহায়, অন্যায়, দুর্নীতি আর বৈষম্য।‘বিন্যাস’ এই নতুন প্রয়াসেরই মহত্তম ফসল। রামনামে এক কাজের লোক এ-উপন্যাসের আত্মা। কিন্তু কোনও বিশেষ চরিত্র সে নয়, বস্তুত সে এক প্রতীক। এই সমাজে তার স্থানটি ঠিক কোথায়, তা অন্বেষণ করতে গিয়ে সমাজের সমগ্র বিন্যাসটিকে এমনভাবে তুলে ধরেছেন বুদ্ধদেব গুহ যে, আমরা চমকে উঠি, ধাক্কা খাই, বেদনাবিদ্ধ হই, কিন্তু। প্রতিবাদের কোনও যুক্তি খুঁজে পাই না।