বিবরণ
ছোটোগল্পের হৃদস্পন্দনযুক্ত স্বল্পাবয়বের নিটোল রচনা অণুগল্প। এ জাতীয় রচনায় গল্প ছাড়াও লেখকের বিশিষ্ট ভাবনা, ধারণা, অনুভব, অনুভূতির প্রকাশ থাকতে পারে। গদ্য ও পদ্য উভয় রীতিতেই অণুগল্প লেখা গেলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তা দুইয়ের মাঝ বরাবর হাঁটে। শিল্পীর তুলির আঁচড়ে বনস্পতি এখানে বীজাকারে আত্মপ্রকাশ করে। বুক থেকে যেমন বুকলেট, সিগার (চুরুট) থেকে যেমন সিগারেট, কবিতা থেকে যেমন কবিতিকা, ঠিক তেমনি ছোটোগল্পের গর্ভ থেকে অণুগল্পের জন্ম। এর উৎস ‘ওম্নাদ’ হলেও বৈদিক দেবদেবীর বিভিন্ন মন্ত্র, চুর্ণক, চুটকি, আর্যা, ধাঁধা, প্রবাদ-প্রবচন, নীতিকথা, লোককথা প্রভৃতির খোলস ছাড়তে ছাড়তে তা স্বতন্ত্র রূপ ধারণ করে। কবিতা, নাটক, গান, প্রবন্ধ, উপন্যাস, পত্র, চিত্র, নৃত্য প্রভৃতি সাহিত্যের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই এর অনুপ্রবেশ হলেও নিজস্ব মৌলিকতায় ভাস্বরিত। জলে ফেলা একফোটা তেলের বিচিত্র বাহার বা সিন্ধুকে বিন্দুতে দেখানো হয় এখানে। একটি কথার গর্ভে বহু কথা উঁকি মারে। চেতনার জগতে ভাবের আণবিক বিস্ফোরণ ঘটানো এর ধর্ম। নিঃশব্দে তর্জনী সংকেত করে নীরবতার মধ্য দিয়ে কথার হার রচনা করে অণুগল্প। আধুনিক হাংরি জেনারেশনের ক্ষুধার নিবৃত্তি করে বলেই দেশে দেশে দিকে দিকে উত্তরোত্তর এর আদর ও কদর বেড়ে চলেছে।