আধুনিক জনসংযোগের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট লেখক ও কলকাতার ইতিহাস বিশেষজ্ঞ ও গবেষক ছিলেন রাধাপ্রসাদ গুপ্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জন্মস্থান থেকে কলকাতায় এসে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম এ পাশ করেন। ভারতীয় বহুজাতিক সংস্থা টাটা গোষ্ঠীর জনসংযোগ আধিকারিক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং দীর্ঘদিন এই পেশায় যুক্ত থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পর মূলত পড়া ও লেখা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্প সবেতেই তার অপরিসীম আগ্রহ ছিল। ভবঘুরে ও উদ্ভট চরিত্রের ন্যায় কলকাতার সমস্ত সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সাধারণ পোশাকে স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেড়িয়েছেন। চিত্রকলার গুণগ্রাহী ছিলেন। শিল্পকলা সম্পর্কে তাঁর বিশেষ জ্ঞান ছিল। যখন যেখানে বিশেষ কিছু চাক্ষুষ করেছেন, তা সংগ্রহ করেছেন। তার ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার, শিল্প ও চিত্রকলা সংগ্রহ দেশ-বিদেশের বিদ্বৎসমাজকে আকৃষ্ট করেছিল। তার সংগ্রহে ছিল বহু দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ ও ছবি। তিনি নিজেও দেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নানা বিষয়ে নিয়মিতই লিখতেন। কলকাতার ইতিহাস বিশেষজ্ঞ হিসাবে তার পরিচিতি ছিল। তিনি কলকাতা শহরের বিভিন্ন বিচিত্র বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতেন। কলকাতার পুরানো কথা জানতে কালীঘাট পট, কমিক্স, পুরনো পঞ্জিকা, এমনকি নানা রেস্টুরেন্টের মেনু কার্ড ইত্যাদিও সংগ্রহ করতেন। নিজের অভিনব চিন্তায় আর লেখার ধরনে উপস্থাপন করেছেন। তবে তার রচিত বাংলায় লেখা গ্রন্থ মাত্র তিনটিই কলকাতার ফিরিওয়ালার ডাক আর রাস্তার আওয়াজ, মাছ আর বাঙালি, স্থান কাল আর পাত্র।