বিবরণ
মধু তাকিয়ে থাকে। বিদ্যাসাগর ফের বলেন, তোমার লেখার হয়তো আর-একটি অনাবিষ্কৃত দিক আছে! রাবণের পক্ষ অবলম্বন করে তুমি কলম ধরেছ। এটাকে যদি একটা রূপক হিসেবে কল্পনা করা যায় তাহলে এই কাহিনি আজকের ভারতের স্বাধীনতার যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতেও মূল্যবান! রাবণ হচ্ছেন মুক্তিকামী ভারতীয়দের প্রতিনিধি!শুনতে শুনতে মধু ফের শিহরিত হয়! অনুভব করে, সে একটু একটু করে বরফের মতো গলে যাচ্ছে! ফের বিদ্যাসাগরকে প্রণাম করে বেরিয়ে আসে। এবং কোনো দিকে না তাকিয়ে হাঁটতে থাকে। তারপর দৌড়োতে থাকে। মনের আনন্দে, খুশির জোয়ারে। জীবনে এত আনন্দ আর কখনও পায়নি সে। দৌড়োতে দৌড়োতে শেক্সপিয়ারের একটা লাইন মাথার মধ্যে এসে যায়- 'It is not the stars to hold our destiny, but in ourselves.'মাইকেল মধুসুদন দত্ত। বাংলা কবিতাকে যিনি দিয়েছিলেন আধুনিকতার স্বাদ। হিসাব করে টাকা খরচ করতেন না কোনোদিনই। পকেটের টাকা তাঁর বাসি হত না। অথচ তাঁকেই দিনের পর দিন শুধু জল খেয়ে কাটাতে হয়েছে। সামান্য টাকার জন্য হয়েছেন চরম অপমানিত। চার সন্তানসহ রেবেকাকে ফেলে এসেছেন মাদ্রাজে আবার তিনিই হেনরিয়েটার মৃত্যুর পর আর বাঁচতে চাননি। অদ্ভুত এক পাগলামো তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়কে নিয়ন্ত্রণ করে গেছে নিয়তির মতো। মহাকবি মাইকেলের জীবননির্ভর সাড়ে বারোশো পাতার সুবৃহৎ উপন্যাস 'মধুময় তামরস'।